Menu Close

সম্পাদকীয়

নতুনের অপেক্ষাকে কি সাধনা বলা যায়?

আমার কাছে সাধনা সে-এক অপেক্ষাই। গুছিয়ে নেওয়ার পর পরীক্ষা, সব গোছানো হল তো? ট্রেন ধরার আগে এই ভাবনা তাড়িয়ে বেড়ায়। সবটা ঠিক মতন গুছিয়ে তোলাই তো সাধনা। যা কিছু অগোছালো, তাই তো পূর্ণতার পথে বাধা। প্রতিদিন সেই চেষ্টাই চালাতে হয় সকলকে। যেমন, সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার কাজ করি। কতটা কথার মাঝে থাকব, কতটা বলব, গতকাল কতটা বলে ক্লান্ত হয়েছি, দিন-শেষে লজ্জা করেছে নিজেরই কথার ভার দেখে! সাধনায় বিরাম যায় না৷ হয় কিনা, সে-প্রশ্ন থাক। ভুলের ভারও যে সাধনাকেই বইতে হয়। যখন লিখতে বসি, ভয় করে একই কথা, বাক্যের মালা গাঁথতে বসিনি তো? গেঁথে ফেললে সে যে অহংকারের শিরদাঁড়া হয়ে উঠবে। পথ যাবে আটকে। পথ খুলে ফেলার সাধনা করতে পারলুম কিনা তাও দেখা প্রয়োজন। সাধনা না থাকলে ক্ষতি কী? সঠিক বলতে পারি না, তবে পথের মাঝে আটকে পরবার ভয় থেকেই যায়।

অতিভুজ-ও এক নতুন সাধনায় এসে পৌঁছোলো। এবার থেকে আর প্রিন্ট নয়, ওয়েব ভার্সানেই পড়া যাবে অতিভুজ। এ-সংখ্যা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল আগেই। থমকাতে হল অতিমারির জন্য। তারপরও প্রিন্ট করাই যেত, কিন্তু লেখকদের সৌজন্য সংখ্যা দেওয়াটা মুশকিল হয়ে উঠত। অন্যদিকে ভেবে দেখলাম, লেখা জমা দিয়ে লেখকই বা দীর্ঘকাল বসে থাকবেন কেন? এবার থেকে প্রতি সপ্তাহে বা পনেরোদিন অন্তর ভালো লেখা এলেই তা প্রকাশিত হয়ে যাবে অতিভুজ-এর ওয়েবে। লেখা এবং তার প্রকাশের নিয়মানুবর্তিতাও যে এক সাধনা।

এ তো গেল আমার কথা। নিজের কথাও যে একসময় অহংকারের মতোই শোনায়। তার চেয়ে শুনতে চেয়েছিলাম অন্যান্যদের মত। কেমন তাদের সাধনা? কেমন সাধনার পর তাদের বই, বই হয়ে উঠল। তা নিয়েই বললেন দুই কবি। রিমি দে এবং শবরী রায়। অন্যদিকে, গৌরব চক্রবর্তী করে ফেললেন আমেরিকান কবি রবার্ট ব্লাই-এর কবিতার অনুবাদ। অন্যের স্বাদে নিজের স্বাদ খুঁজে পাওয়ার পথও কিন্তু সাধনা-ই।

সাধনার ফল কেমন হবে তা সময় এবং সময়ের হাতেই ছেড়ে দিলে ভালো হয়। আপাতত ভাবনা এতটুকুই, সাধনায় গাফিলতি নেই তো?


বিতান চক্রবর্তী-র বইপত্র

Spread the love

2 Comments

  1. রাহুল ঘোষ

    খুব সুন্দর সংখ্যা হয়েছে। এই করোনা পরিস্থিতিতে পড়ে বেশ আরাম পেলাম।

  2. স্বপন নাগ

    মাত্র সম্পাদকীয় পড়েছি, ‘সাধনা’। পত্রিকার আরও ভিতরে প্রবেশের স্পৃহা তৈরি হল এর পর থেকে। গুছিয়ে নেওয়া, নিখুঁত থাকার উদ্বেগ, পুনরাবৃত্তি থেকে মুক্ত থাকার আকাঙ্ক্ষাকে সাধনা হিসেবে চিহ্নিত করা ‘অতিভুজ’-এর প্রতি ঝুঁকতে প্ররোচিত করেছে আমায়। সম্পূর্ণ পাঠান্তে বিস্তৃত মতামত দেবার ইচ্ছে রইল। আপাতত পত্রিকার সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *